বাংলার আলো ডেস্ক: সিনেমার পর্দায় প্রথমবার খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় করেছেন হেডি লামার। আবার সেই অভিনেত্রীই এমনই প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন, যা বর্তমান সময়ে ওয়াইফাই-এর মূলে। সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী গুণের অধিকারী ছিলেন হেডি। পর্দায় তার সৌন্দর্য দর্শকদের মোহিত করেছিল।
পাশাপাশি নব্বইয়ের দশকের শুরুতে অভিনেত্রীর নগ্নতা, যৌনতার দৃশ্য চমকে দিয়েছিল ভক্তদের। চেকস্লোভাকিয়ায় এক ইহুদি পরিবারে জন্ম। ছোট থেকেই সৌন্দর্য্যের জন্য খ্যাতি ছিল তার। সে কারণেই সিনেমাতেও অভিনয় শুরু। ১৯৩৩ সালে চেকস্লোভিয়ায় ‘এক্সটসি’ নামের এক সিনেমায় প্রথমবার পর্দায় কোনও মহিলার অর্গাজম দেখানো হয়েছিল। যেই দৃশ্যে অভিনয় করেন হেডি লামার। সিনেমাটি প্রচার হওয়ার পরেই সৌন্দর্য্য ও যৌনতার আইকন হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর মাত্র ১৯ বছর বয়সেই অস্ট্রিয়ার এক ধনকুবেরের সঙ্গে নায়িকার বিয়ে হয়। সেই ব্যক্তিই আবার অস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন।
হিটলার ও মুসোলিনিকে অস্ত্র বিক্রি করে বড়লোক হয়েছিলেন। যদিও সেই সংসারে সুখী ছিলেন না হেডি। যে কারণে বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই বাড়ি থেকে পালিয়ে মার্কিন মুলুক পাড়ি দেন। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে অভিনয়ের ক্যারিয়ার শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই সাফল্য পান। তবে শুধুমাত্র সুন্দরী, সাহসী অভিনেত্রীই নন। তার আরও একটি পরিচয় ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, তখন নাৎসিদের বিরুদ্ধে লড়ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যেভাবে হোক মার্কিন পক্ষের পাশে দাঁড়াতে চাইছিলেন হেডি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে ব্যবহৃত গোপন রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ধরে ফেলছিলেন জার্মান বিজ্ঞানীরা। আর সেখানে আঘাত হানার আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমস্থ প্ল্যান ফাঁস হয়ে যাচ্ছিল। তবে হেডির এই আবিষ্কার যুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়নি। একে তো তিনি অস্ট্রিয়া থেকে এসেছেন। তার উপর সিনেমার অভিনেত্রী। যে কারণে সেভাবে তার আবিষ্কারকে গুরুত্বই দেওয়া হয়নি।
তবে আজ ওয়াইফাই, জিপিএস-এর মতো আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ভিত্তিই এই ফ্রিকোয়েন্সি হপিং প্রযুক্তি। হেডি লামারের জীবনকাহিনী হলিউডের স্টিরিওটাইপকেই ভেঙে চুরমার করে দেয়। এটাই প্রমাণ করে যে যৌন আবেদন গ্ল্যামারের আড়ালেই লুকিয়ে ছিল তার দুর্দান্ত বিজ্ঞানীর মন।