ইকবাল বাহার, পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে দুই মাথা নিয়ে এক নবজাতক শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল সোয়া ১১টার সময় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রপচারের মাধ্যেমে শিশুটি জন্মগ্রহণ করে। জন্মের পর শিশুটির অবস্থা কিছুটা অবনতি হওয়ায় নবজাতক শিশু পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হলে দুপুর সোয়া ১টার সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। পরে দুপুর ১টা ৩০মিনিটের দিকে বিস্কুট রাখার একটি কার্টুৃনে মৃত শিশুটিকে বাসায় নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে, দুই মাথার শিশুর জন্মের খবরটি হাসপাতালে ছড়িয়ে পরলে শিশুটিকে এক ঝলক দেখতে হাসপাতালের নবজাতক শিশু পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সামনে জমায়েত হয়।
নবজাতক শিশুটি পঞ্চগড়ের অমরখানা ইউনিয়নের কাজিরহাট মহারাজার দিঘী প্রধানপাড়া গ্রামের চা শ্রমিক মাজেদুল ইসলাম ও সুরভী আক্তার দম্পতির প্রথম সন্তান।
শিশুটির পারিবারিরক সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকের পরামর্শে গেলো শনিবার (১০ মে) বিকেলে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় প্রসূতি সুরভী আক্তারকে। এর পর চিকিৎসার মাঝে সোমবার (১২ মে) আলট্রাসনোগ্রাম করা হলে চিকিৎসক জানায় দুটি সন্তান রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১১টার সময় হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেয়া হলে দুই মাথায় নিয়ে ছেলে নবজাতক শিশুটি জন্মগ্রহণ করে। এরপর শিশুটিকে হাসপাতালের নবজাতক পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে অবজারভেশনে রাখে চিকিৎসক।
শিশুটির বাবা চা শ্রমিক মাজেদুল ইসলাম বলেন, গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আমাদের বিয়ে হয়। আর এই সন্তানটি আমার প্রথম সন্তান। গতকাল আলট্রাসনোগ্রাম করেছিলাম, ডাক্তার বলেছে দুইটি বাচ্চা আছে। এর পর আজকে (মঙ্গলবার) তার জন্ম হয়। শরীরের সব স্বাভাবিক থাকলেও দেখছি মাথা দুইটা। তবে যাই হোক না কেন সন্তানকে বাঁচানো গেলনা। এই কষ্ট আমি সইতে পারছিনা।
পরিবারের অন্য সদস্যরা বলেন, গর্ভবতী অবস্থায় গত কয়েকদিন আগে বেশ কিছু আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়। সব স্বাভাবিক থাকলেও আলট্রাসনোগ্রামের চিকিৎসক জানিয়েছিল দুইটি বাচ্চা আছে। আমরা অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে ছিলাম। এখন দেখছি একটি বাচ্চা আর দুইটি মাথা।
এ সময় নবজাতক শিশু পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক (শিশু বিশেষজ্ঞ) আবু সায়েম বলেন, সিজারিয়ান সেকশনে অপারেশন হলে দুই মাথার বাচ্চাটি জন্ম হয়। ডেলিভারি সময় পার করে বাচ্চার মা আমাদের কাছে এসেছিল, এবং মায়ের পেটে পানি কম ছিল। বাচ্চা মায়ের পেটে মেকোনিয়াম পাশ করেছে। যার কারণে বাচ্চাদের রেসপেক্ট ডিসট্রেস প্রচন্ড রকম আছে। আমরা চেষ্টা করেছি তাকে সুস্থ্য করার। কিন্তু দুপুর সোয়া একটার দিকে শিশুটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আবুল কাশেম শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শিশুটি অবস্থা ক্রিটিক্যাল সহ মায়ের পেটে ময়লা খাওয়ায় অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। জন্মের পর আমরা পরীক্ষায় রেখেছি। এর পরে প্রায় সোয়া ১টার সময় মারা যায়।