বাংলার আলো ডেস্ক: দাবি না মেনে উল্টো আন্দোলনের সমন্বয়কদের চাকরিচ্যুতি ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি পালন করছেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাধীন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পাঁচজন জেনারেল ম্যানেজারকে চাকরিচ্যুত এবং সমিতির ১৫ জন কর্মীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদেই এই ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা জানুয়ারি মাস থেকে জরুরি সেবা চালু রেখে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।
কিন্তু কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দাবি মেনে না নেওয়ায় তারা এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার আন্দোলনের চার সমন্বয়ক এক বিবৃতিতে দুটি প্রধান দাবি তুলে ধরেছেন। তাদের প্রথম দাবি- বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা এবং দ্বিতীয় দাবিটি হলো ১০ জন চাকরিচ্যুত কর্মীকে পুনর্বহাল এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা।
ব্ল্যাকআউটের বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপ-মহাব্যবস্থাপক (কারিগরি) মো. আবু ছায়েম বলেন, ‘আমরা অফিসিয়ালি কোনো ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি পালন করিনি।
তবে আজকে আমাদের মহাব্যবস্থাপক মুকুল হোসেন ও উপ-মহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান ভূইয়াকে কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই বরখাস্ত করা হয়েছে। এ জন্য আমাদের কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আমরা কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ও বিদ্যুৎ সচিবের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য চিঠি পাঠানো হলেও এখনো পর্যন্ত কেউ সাড়া দেননি।
এদিকে ব্লাকআউটের ফলে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মধ্যে ১৭টি সমিতির গ্রাহক বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছেন, যার মধ্যে রয়েছে নেত্রকোনা, ঢাকা-২, বরিশাল -১, কুমিল্লা-১, কুমিল্লা-২, কুমিল্লা-৪, কুমিল্লা-৩, নোয়াখালী, মুন্সীগঞ্জ, মাগুড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঝালকাঠি, রংপুর-১, সিরাজগঞ্জ-২, মানিকগঞ্জ, ঢাকা-৪, ঢাকা-১ গাজীপুর বিদ্যুৎ নেই। এই পরিস্থিতিতে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ গ্রাহকের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তারা এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান দাবি করছেন। এর মধ্যে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, ২, ৩ ও ৪ এলাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান কার্যালয় পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে সমিতির কর্মচারীরা জড়ো হয়ে সকাল থেকে বিক্ষোভ করছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কর্মচারীরা ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়া এবং চাকরিচ্যুত জিএমদের পুনর্বহাল না করলে আন্দোলন অব্যাহত রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে কুমিল্লায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পিবিএস) আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকলেও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) আওতাভুক্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।