রাজনৈতিক সংস্কারে শহীদদের আকাঙক্ষার প্রতিফলন চাই: ঢাবি শিবির সভাপতি

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম বলেছেন, ফ্যাসিস্ট শোষণ শুধু ছাত্র রাজনীতি নয়, রাজনীতির সংজ্ঞাই পালটে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদে কোনো রাজনীতি থাকে না। বিরাজনীতি ফ্যাসিবাদের ভাষা।

একই সঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংস্কারে অবশ্যই চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, তা না হলে ভেস্তে যাবে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমরা চাই ছাত্র রাজনীতির সংস্কার গবেষণা, পলিসি ডায়ালগের মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়িত হোক।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজ টাইমলাইনে এক স্ট্যাটাস দিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।

সাদিক কায়েমের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো :

ফ্যাসিস্ট শোষণ শুধু ছাত্র রাজনীতি নয়, রাজনীতির সংজ্ঞাই পালটে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদে কোনো রাজনীতি থাকে না। বিরাজনীতি ফ্যাসিবাদের ভাষা। ফ্যাসিবাদ ছাড়া সব বাদ, ইজম ও রাজনীতি ফ্যাসিবাদে অনুপস্থিত থাকে। ফ্যাসিবাদে কোনো রাজনীতি নাই, শুধু ফ্যাসিবাদই আছে। টেন্ডারবাজি, গুম, খুন, ক্রসফায়ার, ফাঁসি, ধর্ষণ, রাহাজানি, দুর্নীতি এসব রাজনীতি না। এগুলো ফ্যাসিবাদ।

আওয়ামী ফ্যাসিবাদের গত ষোল বছরের ভয়ংকর দিনগুলো কিংবা তারও পূর্বের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো রাজনীতির প্রতি তীব্র ঘৃণা সৃষ্টি করেছিল তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। কিন্তু চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সব ভুল ভেঙে দিয়েছে। রাজনীতি সম্পর্কে তৈরি হয়েছে নতুন সচেতনতা। দেয়ালে দেয়ালে লেখা হচ্ছে, ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’।

আমরা জানি এই স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছে রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট এবং দলের আওতামুক্ত রাজনীতি সচেতন ছাত্র-জনতা। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানোর চেয়ে বড় রাজনীতি আর কোনো রাজনীতিই না। আমরা চাই সেই রাজনীতির আদর্শে ছাত্র রাজনীতির ব্যাপক ইতিবাচক সংস্কার হবে। ভবিষ্যতের ছাত্র রাজনীতিতে মত-দ্বিমত হবে, যুক্তির পাথরে সবাই বিক্ষিপ্ত হবে, কিন্তু কোনো হকিস্টিক কিংবা স্ট্যাম্প থাকবে না। কোনো গেস্টরুম, গণরুম থাকবে না। চব্বিশের আকাঙ্ক্ষাকে বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে এই ছাত্র রাজনীতি। মধুতে ভিন্নমতের কেউ চা খেলে অপর পক্ষের কেউ তেড়ে আসবে না। একাডেমিক পরিবেশে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে ছাত্র সংসদ ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি।

গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্ন মতের প্রতি থাকবে সম্মান কিন্তু কেউ যেন স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারে রাখতে হবে সজাগ ও পূর্ণ দৃষ্টি। এই রাজনৈতিক সংস্কারে অবশ্যই চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, তা না হলে ভেস্তে যাবে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমরা চাই ছাত্র রাজনীতির সংস্কার গবেষণা, পলিসি ডায়ালগের মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়িত হোক। এ লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *