হাবিপ্রবির আবাসিক হল থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) আবাসিক হল থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহায়তায় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তাজউদ্দীন আহমেদ হল থেকে এই অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমানের সঙ্গে শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে হল খোলার বিষয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের এক পর্যায়ে হল খোলার পূর্বে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে কথা উঠলে সবার মতামতের ভিত্তিতে আবাসিক হলগুলোতে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ পরবর্তীতে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তাজউদ্দীন আহমেদ হলে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কয়েকটি রুম থেকে ৬টি সামুরাই, ১৪৩টি বাঁশের লাঠি, ১৬টি লোহার রড, ২২টি লোহার পাইপ, ২টি লোহার চেইন, ৩টি খালি মদের বোতল ও মাদকসামগ্রী উদ্ধার করা হয়। জানা গেছে, সরকার পতনের পূর্বে তাজউদ্দীন আহমেদ হলে সার্বক্ষণিক অবস্থান করতেন হাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম. এম. মাসুদ রানা মিঠু।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান হাবিপ্রবি ছাত্রলীগের এই সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে হলের শিক্ষার্থীদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে নিয়ে যাওয়া এবং না গেলে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সিট বাতিল করে দেবে—এমন হুমকি ছাড়া শারীরিকভাবেও নির্যাতন করা হতো। হাবিপ্রবি রেজিস্টার ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, তাজউদ্দিন আহমেদ হলের একটি ফ্লোর থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। হাবিপ্রবির অন্যান্য হলেও দেশীয় অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র থাকতে পারে বলে ধারণা করছি। সেই হলগুলোতেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালানো হবে।

কেননা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত হলগুলো থেকে যে পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করছে, এই অস্ত্র হলে থাকলে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব অন্যান্য হলগুলোতেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। অভিযান শেষে উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকদের সহায়তায় সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কোতয়ালী থানার ওসি মো. ফরিদ হোসেন অস্ত্রগুলো থানায় জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *