স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি (বিডিবিএল)-এ সম্প্রতি রাজনৈতিক স্বার্থে এক ভয়ংকর দ্বিচারিতা ও সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর সক্রিয়তা সামনে এসেছে।
যারা এতদিন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের মাধ্যমে আওয়ামী দর্শনে অনুগত থেকে ব্যাংকের ক্ষমতা, পদ-পদবী ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন-এখন তারাই নিজেদের বিএনপির লোক দাবি করে কেন্দ্রীয় কমিটির কোন রকম তোয়াক্কা না করে স্বঘোষিত ‘জিয়া পরিষদ’ গঠন করেছিলেন।

তারা শুধু কমিটি গঠন করেই ক্ষ্যন্ত হননি, রীতিমতো সেইসব লোকদের নিয়ে গঠিত কমিটির একটি কপি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছিলেন, যদিও সেই পোস্টটি আপলোড করার ১০ মিনিটের মাথায় তা আবার ডিলিট করে দেওয়া হয়েছিল। তবে স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মনে করেন এটি একটি চতুর, মুখোশধারী গোষ্ঠীর নতুন ষড়যন্ত্র, যা ব্যাংকের আদর্শ, সততা ও স্বচ্ছতা নষ্ট করার দুরভিসন্ধিমূলক চেষ্টা।
তারা এই সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ও স্বঘোষিত নেতাদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে গঠিত ভুয়া কমিটি ও গোপন চক্রান্তকারীদের প্রশাসনিকভাবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানান।
ব্যাংক সুত্রে জানা যায়, ঘোষিত জিয়া পরিষদের ১নং সিনিয়র সহ-সভাপতি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিষদের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক (২০২১–২৩) এবং বর্তমানে (২০২৪) সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদকে।
গত ১৫ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান আরিফ। প্রতিটি সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণের ছবি সহ যার অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে আজ তাকেই করা হয়েছে জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। বিষয়টি যেমন বিস্ময়কর, তেমনি গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত বহন করে।
হুমায়ুন কবীর, বর্তমান বঙ্গবন্ধু পরিষদের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক। তাকেও জিয়া পরিষদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে (২০২৪) বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-অর্থ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন খোরশেদ আলম।
অতীতেও তিনি এ পরিষদের অর্থ সম্পাদক (২০২১–২৩) ছিলেন। অথচ এখন তাকেই দেখা যাচ্ছে জিয়া পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে। ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকের অভ্যন্তরে ভয়-ভীতি, বিভ্রান্তি ও গোষ্ঠী রাজনীতির মাধ্যমে পরিবেশ দূষিত করেছেন।
এদিকে স্বঘোষিত জিয়া পরিষদের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেছেন কাজী আবুল বাশার। যিনি২০২২ সালে অফিশিয়ালি রিটায়ার করেন। একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী হয়েও তিনি কিছু বিশেষ চক্রের সহযোগিতায় নিজেকে সভাপতি মনে করছেন। যা শুধু ভবিষ্যৎ ব্যাংক প্রশাসনের জন্য হুমকি নয়, বরং এটি ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নীতিমালারও লঙ্ঘন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এই চতুর ও মুখোসধারী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এখনই তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আহ্বান জানান।