ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: রাস্তাটা ৪ লেনের কিন্তু এর দু’লেন ইজি বাইকের দখলে থাকে। ফলে মানুষ চার লেনের যে সুবিধা সেটা কখনই ভোগ করতে পারছেনা। ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তাা হতে বালিয়াডাঙ্গী মোড় পর্যন্ত ৬ কি.মি. সড়ক ৪ লেনে উন্নিত করা হয় বছর চারেক আগে।
ঠাকুরগাঁও জেলার ৫টি উপজেলার সাথে সদরের যোগাযোগের একমাত্র সড়কটি ৪ লেনে উন্নীত হওয়ায় সবাই বেশ খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু সেই খুশি খুুব বেশিদিন ধরে রাখা যায়নি। সড়কটির রোড ডিভাইডারের দু’পাশের ১ লেন করে সার্বনিকভাবে ইজি বাইক ও থ্রি হুইলারের দখলে থাকছে। ইজিবাইক চলাচল তো করছেই, উপরন্তু এই সড়ককেই তাদের স্ট্যান্ড বানিয়ে নিয়েছে । অনিয়ন্ত্রিত ভাবে প্রতিদিনই ঠাকুরগাঁও জেলার রাস্তায় নামছে ইজি বাইক। এ গুলোর চলাচলেও নেই কোন বিধিনিষেধ।
ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের কোথাও ইজিবাইকের নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড না থাকায় এগুলো যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থেকে যাত্রী ওঠা নামা করায় যানজট আরো তীব্র আকার ধারণ করে। ইজিবাইকের কারণে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণও কম নয়। সেসব দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানও কারও কাছে নেই । এ বছর মাত্র ১ হাজার ইজিবাইক নিবন্ধন করেছে । গত বছর নিবন্ধিত সংখ্যা ছিল সাড়ে ৪ হাজার। আসলে বাস্তাবে এ সংখ্যা কয়েকগুন বেশি।
পৌরসভার সচিব মজিবর রহমান জানান, ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও রিক্সার সঠিক সংখ্যা জানা না, গেলেও সংখ্যাটি ১০ হাজারের মতো হতে পারে। তিনি বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নের ও অন্য উপজেলার এই ত্রিচক্র যানটি পৌরসভার রাস্তাায় এসে ভিড় করছে। এগুলি নিয়ন্ত্রন করে নির্দিষ্ট সংখ্যক ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে কর্তৃপক্ষ।
পৌর শহরের নিশ্চিন্তপুর মহল্লার আরিফ হোসেন নামের ইজিবাইক চালকের সাথে কথা হলে জানা যায়, তার গ্রাম এবং এর আশে পাশেই গাড়ি চালান। তিনি বলেন, এখন অনেক শিতি এবং অবস্থা সম্পন্ন ঘরের ছেলেরাও ইজিবাইক চালাচ্ছে। এর কারণ কী ? এমন এক প্রশ্নে জবাবে আরিফ বলেন “ছোট খাটো ব্যবসার হাল এখন খুব খারাপ, অনেকেই পুঁজি ভাঙ্গিয়ে খাচ্ছে। একারণে ইজিবাইক নিয়ে রাস্তাায় নামছে। প্রতিদিন ২০/৩০ টি করে নতুন ইজিবাইক নামছে সড়কে।
মুদি ব্যবসায়ি মো: লিটন বলেন “রোড এলাকা থেকে কলেজ পর্যন্ত মাত্র ৫ টাকায় আসতে পারছি। এটা আমাদের জন্য বিরাট একটা উপকার বয়ে আনছে”। যানজটের বিষয়টি উল্লেখ করলে তিনি বলেন“ আপনি কি ইজিবাইক বন্ধ করে দিবেন ? তখন তো ৫ টাকার ভাড়া বিশ টাকা দিতে হবে”। ইজিবাইকের কারণে শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আবার এই ইজিবাইক থাকার ফলে সাধারণ মানুষ স্বল্প খরচে কাংখিত গন্তব্যে যেতে পারছে, এটাও ঠিক।
ইজিবাইকের কারণে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়ে এটা মানতে হবে। তবে একটি সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়ন এবং নির্দিষ্ট স্থানে স্ট্যান্ড তৈরি করার মাধ্যমে ইজিবাইকের চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যেতে পারে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ মহল।