হাসান বাপ্পী: ঠাকুরগাঁওয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারি চারজনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে অভিযুক্ত হত্যা মামলার আসামীদের জামিন, রিমান্ড না মঞ্জুর, নিয়োগ বাণিজ্যসহ পক্ষপাতদুষ্ট বিচারকাজ পরিচালনার অভিযোগে উঠেছে ঠাকুরগাঁও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নিত্যানন্দ সরকার ও অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রমেশ কুমার ডাগার বিরুদ্ধে।
এমন অভিযোগ তুলে অবিলম্বে তাদেরকে বিচারকাজ থেকে অপসারন ও ঠাকুরগাঁও হতে প্রত্যাহার দাবি করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের আইনজীবী নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় জেলার সকল আইনজীবীরা আদালত বর্জন করবে এবং আদালতে তালা দিয়ে অভিযুক্ত বিচারকদের ঘার ধাক্কা দিয়ে ঠাকুরগাঁও থেকে বিতারিত করার ঘোষনাও দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলে ঠাকুরগাঁও জেলা আইনজীবী সমিতি ও জেলা জাতীয়তাবাদি আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক।
তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম ও তার ছেলে সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজনের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী হাবিবুল ইসলাম বাবলুর দায়ের করা ১০ কোটি টাকা চাদাবাজি মামলার রিমান্ড ও জামিন শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু দবিরুল ইসলাম অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি বলে তার রিমান্ড শুনানি করেননি বালিয়াডাঙ্গী আমলী আদালতের বিচারক রহিমা খাতুন। তবে মাজাহারুল ইসলাম সুজনের রিমান্ড ও জামিন শুনানি শেষে, তাকে দুই দিন জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। এতে আমরা খুব ক্ষুদ্ধ এবং ব্যথিত হয়েছি।
অতিতে দেখা গেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ থাকা অবস্থায় তাকে রিমান্ডে দেয়া হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ময়লার গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে রিমান্ডে নিয়ে অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে। অথচ দু:খজনক হলেও সত্য যে বাস্তব একটি ঘটনা ঘটার পরও আদালত আসামীর রিমান্ড মঞ্জুর করলেন না।
এন্তাজুল হক আরো বলেন, স্বৈরশাসক আওয়ামী সরকার পরিবর্তন হলেও তাদের পুরাতন যে সেটিংস গুলো ছিল সেগুলো রয়েই গেছে। আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা এখানো তাদের ওপর ভর করছেন। আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের মোহ এখনো কাটেনি। ঠাকুরগাঁওয়ের চিফ জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেট নিত্যানন্দ সরকার আওয়ামী লীগের বড় রকমের একজন এজেন্ট। উনার নেতৃত্বেই ম্যাজিষ্ট্রেসি। উনি জুনিয়র অফিসারদের যেভাবে নির্দেশ দেন তারা সেভাবেই কাজ করতে বাধ্য হন। ঠাকুরগাঁওয়ের বিচার বিভাগকে রক্ষা করার জন্য এসব পক্ষপাতদুুষ্ট দলকানা বিচারকেদের অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে আইন উপদেষ্টাসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ঠাকুরগাঁও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. জয়নাল আবেদিন বলেন, বাদি হাবিবুল ইসলাম বাবলুর জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখে এবং দশ কোটি টাকা চাদা দাবি করেছিল আসামীরা। এ মামলায় আমরা রিমান্ড চেয়েছিলাম কিন্তু আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদি হাবিবুল ইসলাম বাবলু বলেন, এই মামলায় ন্যায় বিচার হচ্ছে না, পক্ষপাতিত্ব হচ্ছে এবং আমি ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হচ্ছি।